
সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ,ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধিঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার নবমী তিথি—মহানবমী পূর্ণ আচার-অনুষ্ঠান ও সাড়ম্বরে উদযাপিত হয়েছে। সকাল থেকেই উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ও পূজামণ্ডপে ভক্তদের ঢল নামে। ভক্তরা শঙ্খধ্বনি, ঢাকের বাদন ও কাঁসরের শব্দে দেবী দুর্গার মহিষাসুর নিধনের বিজয়োৎসব স্মরণ করেন।
মহানবমীর মূল আকর্ষণ ছিল আরতি।
পীরগঞ্জ কেন্দ্রীয় দুর্গা ও কালী মন্দিরে দেবীর সামনে প্রদীপ, ধূপ ও ধুনুচি নিয়ে আরতি উৎসবমুখর ও জাঁকজমকভাবে সম্পন্ন হয় । এসময় ঢাক ও কাঁসরের বাজনা, শঙ্খধ্বনি আর ভক্তদের জয়ধ্বনি মিলে এক অনন্য পরিবেশ সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর ধুনুচি নাচে যোগ দেন অনেক তরুণ-তরুণী। হাতে জ্বলন্ত ধুনুচি নিয়ে তাঁদের ভক্তিমূলক নৃত্য উৎসবের আমেজকে আরও বাড়িয়ে তোলে। বহু পূজামণ্ডপে ধুনুচি নাচ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যা দেখতে উপচে পড়ে মানুষের ভিড়।
পীরগঞ্জের বিভিন্ন পূজামণ্ডপে মহানবমীর আরতি শুধুমাত্র ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং এক সাংস্কৃতিক উৎসবের রূপ নেয়। ছোট-বড় সবাই পূজামণ্ডপে এসে দেবীর আরাধনা ও আশীর্বাদ গ্রহণ করেন। পূজারীর প্রদীপের শিখায় ভক্তরা হাত দিয়ে নিজের কপালে স্পর্শ করে শান্তি, সমৃদ্ধি ও মঙ্গল কামনা করেন।
পীরগঞ্জের পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, মহানবমীর দিন দুর্গাদেবীকে সর্বশক্তিময়ী রূপে পূজা করা হয়। ভক্তদের বিশ্বাস, এই পূজা ও আরতিতে অংশগ্রহণ করলে জীবনের অশুভ শক্তি দূর হয় এবং সমাজে শুভ শক্তির বিজয় ঘটে।
এদিন পীরগঞ্জের প্রতিটি পূজামণ্ডপ সাজানো হয় বর্ণিল আলোকসজ্জা ও বিভিন্ন প্রতীকী সাজসজ্জায়। শিশু-কিশোরেরা উৎসবের আনন্দে মেতে ওঠে, আর নারী-পুরুষ নতুন পোশাকে পূজামণ্ডপে ভিড় জমায়। পূজা শেষে প্রসাদ বিতরণ করা হয়, যা ভাগ করে খেয়ে সকলেই ধর্মীয় ও সামাজিক সৌহার্দ্যের বন্ধনে আবদ্ধ হন।