Dhaka ১০:৫৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরনাম:
“বোদায় সীমান্তে মালিকবিহীন ভারতীয় ৪ গরু আটক করেছে ৫৬ বিজিবি” “সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জে সড়কে সিএনজি দুর্ঘটনায় নিহত ১, আহত ৩” “কালিয়াকৈরে ৩১ দফা প্রচারণায় বর্ণাঢ্য র‌্যালি— খালেদা জিয়ার আদলে সজ্জিত তোয়ামনির অংশগ্রহণে কর্মীদের উচ্ছ্বাস” কালীগঞ্জে জাতীয় দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রস্তুতি সভা ব্রেকিং নিউজ: ভূমিকম্পে আবারও কেঁপে উঠলো নরসিংদী ডিমলায় সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় গরুসহ একজন আটক বুড়িচংয়ে গ্রামের রাস্তায় ড্রামট্রাক্টর চলাচল বন্ধসহ কঠোর অবস্থান- আইনশৃঙ্খলা সভায় সিদ্ধান্ত ভোলাহাটের সন্তান সাইফুল ইসলাম ৪৫তম বিসিএস (আনসার) ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত জুমার দিন ও জুমার নামাজের গুরুত্ব! ভালুকায় অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দিল মোবাইল কোর্ট
বিজ্ঞাপন :
জেলা-উপজেলা ও বিভাগীয় চীফ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতায় আগ্রহীরা দ্রুত যোগাযোগ করুন। সম্পদক-ইমদাদুল হক তৈয়ব-01711576603, সিভি পাঠান এই ইমেইলে- editor.manobjibon@gmail.com

পীরগঞ্জে শিক্ষকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন!!

 

সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বাংলাদেশে শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু বিগত কয়েক দশক ধরে দেখা যাচ্ছে, কোচিং সেন্টার বা ব্যক্তিগত টিউশনি একটি বিশাল বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে পূর্ণ মনোযোগ না দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে কোচিং বা ব্যক্তিগত পড়াতে বাধ্য করেন।

 

ফলে অভিভাবকদের ওপর অযৌক্তিক আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয়। এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষাব্যবস্থাকে শৃঙ্খলিত করতে সরকার “শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ২০১২” প্রণয়ন করেছে।

বাংলাদেশের শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। এদের একটি বড় অংশ পরিচালিত হয় নিয়মের বাইরে। বিদ্যালয়ের পাঠদানে যথেষ্ট জোর না দিয়ে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করেন। এর ফলে—
• শিক্ষা ব্যবসায়িক রূপ ধারণ করে।
•  অভিভাবকের আর্থিক চাপ বাড়ে।
•  দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে।
•  বিদ্যালয়ের পাঠদান দুর্বল হয়ে পড়ে।

এমনকি অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যা•লয় বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফটকেও কোচিং সেন্টারের পোস্টার দেখা যায়, যা সরাসরি সরকারি নীতিমালা ও শিক্ষার আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

২০১২ সালে সরকার “কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা” প্রণয়ন করে। এর মূল বিষয়গুলো হলো—

১. কোনো শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা ব্যক্তিগত টিউশনি করতে পারবেন না।

২. স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে বা ফটকে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার টানানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৩. যদি কোনো শিক্ষক এই নীতিমালা ভঙ্গ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে; প্রয়োজন হলে চাকরি থেকে অব্যাহতি পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে।

৪. শিক্ষার্থীদের বিনা কারণে বাধ্যতামূলকভাবে কোচিংয়ে পাঠানো হলে, সেটি আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

৫. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি রয়েছে, যারা এসব কার্যক্রম তদারকি করবে।

এই আইনের মাধ্যমে মূলত শিক্ষাব্যবস্থার মূল কাঠামোকে রক্ষা করা হয়েছে। শিক্ষককে কেবল শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের প্রতি মনোযোগী করার লক্ষ্যেই এই নীতিমালা। কারণ, শিক্ষা যদি কেবল কোচিং নির্ভর হয়, তবে জাতীয় শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। পাশাপাশি দরিদ্র শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে।

 

যদিও আইন প্রণয়ন হয়েছে, বাস্তবে এর প্রয়োগ এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে। কারণ অনেক শিক্ষক নিয়ম ভঙ্গ করেও পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে রেহাই পান।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

“বোদায় সীমান্তে মালিকবিহীন ভারতীয় ৪ গরু আটক করেছে ৫৬ বিজিবি”

পীরগঞ্জে শিক্ষকের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ্যে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন!!

Update Time : ১০:৩৪:৪০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫

 

সাকিব আহসান,পীরগঞ্জ, ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি: বাংলাদেশে শিক্ষা একটি মৌলিক অধিকার। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু বিগত কয়েক দশক ধরে দেখা যাচ্ছে, কোচিং সেন্টার বা ব্যক্তিগত টিউশনি একটি বিশাল বাণিজ্যে পরিণত হয়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষকেরা অনেক সময় শ্রেণিকক্ষে পূর্ণ মনোযোগ না দিয়ে শিক্ষার্থীদেরকে কোচিং বা ব্যক্তিগত পড়াতে বাধ্য করেন।

 

ফলে অভিভাবকদের ওপর অযৌক্তিক আর্থিক চাপ সৃষ্টি হয়। এই প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ ও শিক্ষাব্যবস্থাকে শৃঙ্খলিত করতে সরকার “শিক্ষক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা, ২০১২” প্রণয়ন করেছে।

বাংলাদেশের শহর থেকে গ্রাম সর্বত্র কোচিং সেন্টার গড়ে উঠেছে। এদের একটি বড় অংশ পরিচালিত হয় নিয়মের বাইরে। বিদ্যালয়ের পাঠদানে যথেষ্ট জোর না দিয়ে অনেক শিক্ষক শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট কোচিংয়ে যেতে বাধ্য করেন। এর ফলে—
• শিক্ষা ব্যবসায়িক রূপ ধারণ করে।
•  অভিভাবকের আর্থিক চাপ বাড়ে।
•  দরিদ্র ও প্রান্তিক শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়ে।
•  বিদ্যালয়ের পাঠদান দুর্বল হয়ে পড়ে।

এমনকি অনেক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যা•লয় বা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ফটকেও কোচিং সেন্টারের পোস্টার দেখা যায়, যা সরাসরি সরকারি নীতিমালা ও শিক্ষার আদর্শকে প্রশ্নবিদ্ধ করে।

২০১২ সালে সরকার “কোচিং বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ নীতিমালা” প্রণয়ন করে। এর মূল বিষয়গুলো হলো—

১. কোনো শিক্ষক তাঁর নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের কোচিং বা ব্যক্তিগত টিউশনি করতে পারবেন না।

২. স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে বা ফটকে কোচিং সেন্টারের বিজ্ঞাপন, পোস্টার, ব্যানার টানানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

৩. যদি কোনো শিক্ষক এই নীতিমালা ভঙ্গ করেন, তাঁর বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে; প্রয়োজন হলে চাকরি থেকে অব্যাহতি পর্যন্ত দেওয়া যেতে পারে।

৪. শিক্ষার্থীদের বিনা কারণে বাধ্যতামূলকভাবে কোচিংয়ে পাঠানো হলে, সেটি আইনত শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

৫. জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মনিটরিং কমিটি রয়েছে, যারা এসব কার্যক্রম তদারকি করবে।

এই আইনের মাধ্যমে মূলত শিক্ষাব্যবস্থার মূল কাঠামোকে রক্ষা করা হয়েছে। শিক্ষককে কেবল শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের প্রতি মনোযোগী করার লক্ষ্যেই এই নীতিমালা। কারণ, শিক্ষা যদি কেবল কোচিং নির্ভর হয়, তবে জাতীয় শিক্ষানীতির উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়। পাশাপাশি দরিদ্র শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ে।

 

যদিও আইন প্রণয়ন হয়েছে, বাস্তবে এর প্রয়োগ এখনো চ্যালেঞ্জের মুখে। কারণ অনেক শিক্ষক নিয়ম ভঙ্গ করেও পারিবারিক ও সামাজিক প্রভাব খাটিয়ে রেহাই পান।