Dhaka ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ অক্টোবর ২০২৫, ২১ আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরনাম:
নীরব হলো নির্ভীক কলম: চলে গেলেন শ্রীপুরের ‘প্রিয় জামাল ভাই’ তারাকান্দায় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিনকে পিটিয়ে হত্যা, আটক ২ কালিয়াকৈর নৌকা ডুবি নিহতের পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার আহামেদ খাগড়াছড়ির পানছড়ি গহীন জঙ্গলে সেনা অভিযান ইউপিডিএফ এর গোপন আস্তানা উন্মোচিত অস্ত্র গোলাবারুদ উদ্ধার বন বিভাগের অভিযানে মাধবপুরে প্রভাবশালীর বাড়ি থেকে শালিক উদ্ধার ভালুকায় ওরিয়ন নিট টেক্সটাইলের উৎপাদন বন্ধ, বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ আপনাদের সাথে আনন্দ ভাগাভাগি করতে এসেছি- পৃজা মান্ডপ পরিদর্শনে পল্লী বিদ‍্যুৎ জিএম হোসেনপুরে যুবক হত্যা: দোষীদের গ্রেফতারের দাবিতে স্মারকলিপি নবীপ্রেম ও মানবতার কবি শেখ সাদী (রহ.) রহনপুরে ইসলামী ব্যাংক গ্রাহক ফোরামের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
বিজ্ঞাপন :
জেলা-উপজেলা ও বিভাগীয় চীফ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতায় আগ্রহীরা দ্রুত যোগাযোগ করুন। সম্পদক-ইমদাদুল হক তৈয়ব-01711576603, সিভি পাঠান এই ইমেইলে- editor.manobjibon@gmail.com

“রা বি শিক্ষকদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য”

 

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। বর্তমান ছাত্রদলের রাবি শাখার সহ-সভাপতি।

 

জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান নিজের ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবের নামসহ উর্দু বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিনকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন এ নেতা। পরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় একাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেন বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়াও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন একাডেমিক কমিটি।

স্ট্যাটাসে ছাত্রদল নেতা লেখেন, ‘বিভাগের দুই কুলাঙ্গার শিক্ষক ভিসি নকীবের অনুগত কুকুর । বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিনের বেহাল অবস্থা। এই দুই কুকুর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্ক করে খাতায় কম নম্বার দিত যার প্রমাণ স্বয়ং আমি। তাদের হায়া লজ্জা ঘৃণা বলে কি কিছুই নেই?’ পরে এই পোস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সূত্র থেকে জানা যায়, উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও (বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল ৩.৫০ পেতে হবে কিন্তু তার অনার্সে প্রাপ্ত সিজিপিএ ৩.৩৫) আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করায় আবেদনপত্র বাছাইকালে তার আবেদন বাতিল হলে তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বিভাগীয় সভাপতিসহ পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের সাথে বাগবিতণ্ডা, অসদাচরণ এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

এদিকে উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন উপাচার্যের বাসভবনের মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রদলের এ নেতা। এতে উর্দু বিভাগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তিনি একটি বৃহৎ ছাত্রসংগঠনের পদে থাকায় তার ফেসবুক পোস্ট ও হুমকির কারণে উর্দু বিভাগের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বিভিন্ন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তে বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদপত্র ও সকল প্রত্যয়নপত্র বাতিল করা হলো এবং ভবিষ্যতে বিভাগ থেকে তাকে কোনো প্রকার প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হবে না। উর্দু বিভাগে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় এবং ভবিষ্যতে তিনি বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। শৃঙ্খলাবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় পোষ্ট করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানায় বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, ‘চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তো আর হবেনা। আমাকে এ বিষয়ে কেউ ডাকেনি এবং কেউ জানতেও চায়নি। তবে আমি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছি, তারা আমাকে মার্কস কম দিয়েছেন। এছাড়াও একাডেমিক মিটিংয়ে সকল শিক্ষক উপস্থিতও ছিলেন না বলে জানান তিনি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকদের নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য তা কোনোভাবেই কাম্য না। অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদেরকে কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন যা শুধু আমাদের জন্য নয় বরং শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর। আমরা প্রশাসন থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় নিউজ

নীরব হলো নির্ভীক কলম: চলে গেলেন শ্রীপুরের ‘প্রিয় জামাল ভাই’

“রা বি শিক্ষকদের নিয়ে অশ্লীল মন্তব্য”

Update Time : ১১:০৩:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১ অক্টোবর ২০২৫

 

মো: গোলাম কিবরিয়া,রাজশাহী জেলা প্রতিনিধিঃ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উর্দু বিভাগে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগে ছাত্রদল নেতার প্রশংসাপত্র ও চারিত্রিক সনদপত্র বাতিল করা হয়েছে। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু বিভাগের ২০১৩-১৪ সেশনের শিক্ষার্থী। বর্তমান ছাত্রদলের রাবি শাখার সহ-সভাপতি।

 

জানা যায়, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেলে ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান নিজের ফেসবুক পোস্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ্ হাসান নকীবের নামসহ উর্দু বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম ও প্রফেসর ড. মো. নাসির উদ্দিনকে নিয়ে অশালীন মন্তব্য করেন এ নেতা। পরে গত ২৪ সেপ্টেম্বর বিভাগীয় একাডেমিক কমিটিতে এমন সিদ্ধান্ত নেন বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়াও এমন মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আইনি ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন একাডেমিক কমিটি।

স্ট্যাটাসে ছাত্রদল নেতা লেখেন, ‘বিভাগের দুই কুলাঙ্গার শিক্ষক ভিসি নকীবের অনুগত কুকুর । বর্তমান চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম ও সহকারী প্রক্টর নাসির উদ্দিনের বেহাল অবস্থা। এই দুই কুকুর ছাত্র-ছাত্রীদের মার্ক করে খাতায় কম নম্বার দিত যার প্রমাণ স্বয়ং আমি। তাদের হায়া লজ্জা ঘৃণা বলে কি কিছুই নেই?’ পরে এই পোস্টকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির সূত্র থেকে জানা যায়, উর্দু বিভাগে শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে বুলবুল রহমান যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও (বিজ্ঞপ্তির শর্ত ছিল ৩.৫০ পেতে হবে কিন্তু তার অনার্সে প্রাপ্ত সিজিপিএ ৩.৩৫) আবেদন করেন। বিজ্ঞপ্তির শর্ত পূরণ না করায় আবেদনপত্র বাছাইকালে তার আবেদন বাতিল হলে তিনি ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে বিভাগীয় সভাপতিসহ পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের সাথে বাগবিতণ্ডা, অসদাচরণ এবং বিভিন্ন প্রকার হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

এদিকে উর্দু বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ বোর্ড বন্ধ করতে গত ১১ আগস্ট সিন্ডিকেট সভা চলাকালীন উপাচার্যের বাসভবনের মূলফটকে তালা লাগিয়ে দেন ছাত্রদলের এ নেতা। এতে উর্দু বিভাগের পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুণ্ন হয়। তিনি একটি বৃহৎ ছাত্রসংগঠনের পদে থাকায় তার ফেসবুক পোস্ট ও হুমকির কারণে উর্দু বিভাগের শিক্ষকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।

বিভিন্ন ন্যক্কারজনক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় একাডেমিক কমিটির সিদ্ধান্তে বুলবুল রহমানকে উর্দু বিভাগ থেকে তার প্রশংসাপত্র, চারিত্রিক সনদপত্র ও সকল প্রত্যয়নপত্র বাতিল করা হলো এবং ভবিষ্যতে বিভাগ থেকে তাকে কোনো প্রকার প্রত্যয়নপত্র প্রদান করা হবে না। উর্দু বিভাগে তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয় এবং ভবিষ্যতে তিনি বিভাগের কোনো কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। শৃঙ্খলাবিরোধী ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসত্য, অশালীন ও কুরুচিপূর্ণ ভাষায় পোষ্ট করায় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে উপাচার্যের কাছে আহ্বান জানায় বিভাগীয় একাডেমিক কমিটি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা বুলবুল রহমান বলেন, ‘চারিত্রিক সনদ বাতিলের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তবে তারা মনগড়া কোনো সিদ্ধান্ত নিলে তো আর হবেনা। আমাকে এ বিষয়ে কেউ ডাকেনি এবং কেউ জানতেও চায়নি। তবে আমি বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে পোস্ট দিয়েছি, তারা আমাকে মার্কস কম দিয়েছেন। এছাড়াও একাডেমিক মিটিংয়ে সকল শিক্ষক উপস্থিতও ছিলেন না বলে জানান তিনি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মুহাম্মাদ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষকদের নিয়ে এমন বাজে মন্তব্য তা কোনোভাবেই কাম্য না। অবৈধভাবে নিজের স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে তিনি শিক্ষকদেরকে কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন যা শুধু আমাদের জন্য নয় বরং শিক্ষকদের জন্য অবমাননাকর। আমরা প্রশাসন থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি করছি।’