Dhaka ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরনাম:
“বিজেএস থেকে বাদ পড়া ১৩ প্রার্থীর গেজেটভুক্তির দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন” “চাঁপাইনবাবগঞ্জে বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশন দিবস পালিত” “পলাশবাড়ীতে নিয়োগ বিধি বাস্তবায়নের দাবিতে কর্মবিরতি ও অবস্থান কর্মসূচি” “ডিমলায় লটারির মাধ্যমে আমন ধান সংগ্রহ” “কালীগঞ্জে শ্রমিক দলের উদ্যোগে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া” “ডিমলায় শহীদ বুদ্ধিজীবী ও মহান বিজয় দিবসের প্রস্তুতিমূলক সভা” কোরআন ও হাদিসের আলোকে ইসলামী দাওয়াত এর গুরুত্ব রাঙ্গামাটিতে দুঃস্থ পুরোহিত ও সেবাইতদের মাঝে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর শীতবস্ত্র বিতরণ “অমরখানায় স্কুলছাত্রকে ছুরিকাঘাত: ১২ কিশোর গ্যাং সদস্য আটক” “পঞ্চগড়ে ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন”
বিজ্ঞাপন :
জেলা-উপজেলা ও বিভাগীয় চীফ নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সাংবাদিকতায় আগ্রহীরা দ্রুত যোগাযোগ করুন। সম্পদক-ইমদাদুল হক তৈয়ব-01711576603, সিভি পাঠান এই ইমেইলে- editor.manobjibon@gmail.com

“লটারি ভিত্তিক ইউএনও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জেএসএফের সমালোচনা”

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৫:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৪৭ Time View

 

হাকিকুল ইসলাম খোকন,বাপসনিউজ: প্রহসনের লটারীতে ইউএনও পদায়নে আওয়ামীমনা ফ্যাসিবাদীদের জয়জয়কার: নেপথ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইং এর ফরিদী, বারিউল ও তৌহিদ সিন্ডিকেট। এখানে নতুন করে আরেকজন যুক্ত হয়েছে জনপ্রশাসন এপিডি উইং এর উজ্বল হোসেন।এই সিন্ডিকেট নিয়ে এর আগে সমালোচনা হলে বারিউলকে জনপ্রশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।কিন্তু নতুন করে উজ্জ্বল যুক্ত হওয়ায় এই সিন্ডিকেট আরো শক্তিশালী হয়।বলে বাপসনিউজকে এক বিরৃতিতে জানিয়েছেন জেএসএফ সংগঠক হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন।

গত ২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ,এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রহসনের ও গোলাটে পদ্বতির লটারীর নামে ৩৭তম বিসিএস এর ১৬৬ জনকে ইউএনও হিসেবে বিভিন্ন উপজেলায় পদায়ন দিয়ে এবং ৩৫ ও ৩৬ ব্যাচের ১৫৮ জনকে ইউএনও থেকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যেখানে ০৫ আগস্টের ন্যায়সঙ্গত জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করলেও সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে অসচ্ছ ও ঘোলাটে লটারীর নামে আওয়ামী ও ফ্যাসিবাদমনা অফিসারদের ইউএনও হিসেবে ঢাকা ও এর আসেপাশের উপজেলায় পদায়ন দিয়ে জুলাই শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে আবারও ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টার নেপথ্যে কারিগর জনপ্রশাসনের এপিডি উইং এর মিয়া আশরাফ রেজা ফরিদী, উজ্জ্বল হোসেন ও তৌহিদ বিন হাসান।

দীর্ঘদিন ধরেই একটা কথা শোনা যায় “জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট”। এই সিন্ডিকেট কিভাবে কাজ করে আর কতদূর তার বিস্তার, কারা সিন্ডিকেটকে ব‍্যাক করেন এগুলি নিয়েই আজকের পোস্ট। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই অভ্যন্তরীণ স্বার্থগোষ্ঠী এমন একটি নেটওয়ার্ক বা গোষ্ঠী, যারা প্রশাসনিক ক্ষমতা, বদলি-পদোন্নতি, সুবিধা বণ্টন, প্রকল্প অনুমোদন কিংবা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। এদের কাজের ধরন অনেকটা “অদৃশ্য প্রভাব বিস্তার” এর মতো।

তারা কি করে? সংক্ষেপে তারা-
১. বদলি ও পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণ; ২. ফাইল ও অনুমোদন বাণিজ্য; ৩. দলবদ্ধ লবিং ও নেটওয়ার্ক; ৪. অর্থনৈতিক স্বার্থ; ৫. রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার; ৬. অভ্যন্তরীণ ভয়-ভীতি ও প্রভাব।

সিন্ডিকেটের ভেতরে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মচারী পর্যন্ত চেইন তৈরি হয়।

১.মিয়া আশরাফ রেজা ফরিদী-

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইং এর যুগ্মসচিব মিয়া মোঃ আশরাফ রেজা ফরিদী ছিলেন আওয়ামী আমলে সুবিধাভোগী। তিনি ০৫ আগস্ট, ২০২৪ এর আগে সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন এবং তার শ্যালক ও ব্যাচমেট আওয়ামীমনা, ফ্যাসিস্ট আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান ছিলেন নরসিংদির ডিসি। আগের আমলে সুবিধাভোগী এ কর্মকর্তা ০৫ আগস্ট, ২০২৪ এর পরবর্তীতে ভোল পাল্টিয়ে এখন হয়ে গেছেন অনেক অফিসারের ভাগ্যনিয়ন্তা। এমনকী তার গঠিত সিন্ডিকেট এর প্রভাব খাটিয়ে সাবেক খুলনার বিভাগীয় কমিশনার জনাব মোঃ ফিরোজ সরকারকে এপিডি হিসেবে বসতে দেওয়া হয়নি বলে শুনা যায়৷

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বদলি/পদোন্নতি/পদায়নের কাজ হয় মন্ত্রণালয়ের “নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ বা এপিডি উইং” থেকে। আর সেখানেই লুকিয়ে আছে সিন্ডিকেটের চর। এপিডি উইংয়ে এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন ঊর্ধ্বতন নিয়োগ অধিশাখার যুগ্মসচিব মিঞা মোহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদী। কে এই ফরিদী? তার ক্ষমতার উৎস কোথায়? নিজেকে বিএনপি বলে পরিচয় দেন অথচ পদোন্নতি পেয়েছেন নিয়মিত এবং ফ‍্যাসিস্টের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরেই কাজ করেছেন। তার কাজ উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব বদলি-পদায়ন-পদোন্নতি কিন্তু তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন ডিসি পদায়ন থেকে শুরু করে সংস্থা প্রধান নির্বাচন। সম্প্রতি কক্সবাজারের ডিসি বা চট্টগ্রামের ডিসি পদায়নকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা কমিটির সাথে যে মতবিরোধের কথা শোনা যায় তার মূলেও আছেন এই ফরিদী, তার পছন্দের লোককে ডিসি বানাতেই সরে যেতে হলো জনপ্রশাসন সচিবকে। তার শ‍্যালক ও ব‍্যাচমেট হচ্ছেন আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান যিনি ছিলেন নরসিংদীর ডিসি ও ফ‍্যাসিস্টের সচিব এম সাজ্জাদুল হাসান এবং মুখ‍্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার একান্ত সচিব (বর্তমানে পরিবেশ উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসাবে বহাল তবিয়তে আছেন)।

২.তৌহিদ বিন হাসান: এপিডি উইংয়ে ফরিদীর ডানহাত আরেক কর্মকর্তা উপসচিব তৌহিদ বিন হাসান, যার খালুশ্বশুর কর্নেল দিলাওয়ার হচ্ছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খুনের একজন আসামী হিসেবে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত।

তিনি নিজে ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ARO) হিসেবে নির্বাচনের আগের রাতে দুই-তৃতীয়াংশ ব‍্যালট বাক্স ভরে ফেলেছিলেন।

তার পিতা আহসান আলী দুদকের উপপরিচালক হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগে বাধ‍্যতামূলক অবসর পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের কর্মকর্তা হিসাবে তিনি এসএসবি সভার তথ‍্য নিয়োগ-বদলি বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের কাছে সরবরাহ করেন এবং সিন্ডিকেট সেই তথ‍্য ধরে বিভিন্ন পদোন্নতি/পদায়নপ্রত‍্যাশী কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এপিডি উইংয়ের এসএসবি এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে টাকার বিনিময়ে পদোন্নতি-পদায়নের চুক্তি করে।

সম্প্রতি ৩০তম ব‍্যাচের উপসচিব পদে পদোন্নতি প্রত‍্যাশী একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে বলা হয় তার রিপোর্ট খারাপ, তারপরেও পদোন্নতি করে দিতে পারবে যদি তারা (বিভিন্ন লেয়ারে দিতে হবে+সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেসহ ১১ লাখ) এরকম কনট্রাক্টে আসেন।

এপিডি উইংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল ক‍্যাডার পদে পদোন্নতির কাজ করা হয় ঊনি-১ শাখা থেকে অথচ ঊর্নি-৩ শাখায় কর্মরত তৌহিদ বিন হাসান উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি শুধু নয়, এ সকল পদে পদায়ন, পিএস নিয়োগ, ইউএনও/এডিসি/ডিসি নিয়োগসহ বিভিন্ন শাখার কার্যক্রমে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/দপ্তরে নিজের লোক পদায়নের মাধ্যমে একটি অনুগত গ্রুপ সৃজন করেছেন যারা ঐসব মন্ত্রণালয়/বিভাগের অভ‍্যন্তরীণ প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন।

আওয়ামী সুবিধাভোগী এই সুবিধাবাদী কর্মকর্তা তার ব‍্যাচের আওয়ামী সুবিধাভোগী বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।

তৌহিদ বিন হাসান ৫ আগস্টের আগে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে গাজীপুরের সহকারী কমিশনার, ঢাকার লালবাগ সার্কেলের এসিল‍্যান্ড, নারায়ণগঞ্জের বন্দরের এসিল‍্যান্ড, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কথিত আছে, এপিডি উইংয়ে বিগত ফ‍্যাসিস্ট সরকারের আমলে বদলি বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের হোতা সাবেক ডিবি প্রধান মনিরুলের স্ত্রী সায়লা ফারজানা এবং তার বশংবদ কে এম আল আমীন, ভাস্কর দেবনাথ, নাজমা নাহারকে খুশি করার মাধ্যমে তিনি ২০২৩ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান।

৫ আগস্টের পরে ভোল পাল্টে এই কর্মকর্তা রাতারাতি বিএনপিপন্থী বনে গিয়ে জনপ্রশাসনের বর্তমান সিন্ডিকেটকে মাসোহারা প্রদানের মাধ্যমে এপিডি উইংয়ে অনুপ্রবেশ করেন। যদি ভবিষ্যতে জামাত ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখেন এই কর্মকর্তা তাহলে তিনি নিশ্চিত জামাত বনে যাবেন, অপেক্ষা করুন।

৩. মোঃ উজ্বল হোসেন: 
এপিডি উইং এর এ সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য৩৪ ব্যাচের কর্মকর্তা জনাব মোঃ উজ্জ্বল হোসেন। যিনি ফ্যাসিবাদী আমলে নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন ফ্যাসিবাদী ডিসি জনাব রাব্বী মিয়ার প্রিয় অফিসার ছিলেন।

সাবেক জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ও ফ্যাসিবাদী রাব্বী মিয়ার কাছের অফিসার হওয়ায় প্রায় দুই বছর নারায়ণগন্জের আড়াইহাজারে এসি ল্যান্ড হিসেবে পদায়ন পেয়েছিলেন। এইচ টি ইমামের কাছের হওয়ায় তাকে উল্লাপাড়া উপজেলা, সিরাজগঞ্জের ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়। তার পুরো পরিবার বগুড়া জেলার শাহজানপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ০৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখের পর বগুড়া বাড়িকে কাজে লাগিয়ে সে হয়ে যায় অনেক অফিসারের ভাগ্যনিয়ন্তা।

অনেককে ফ্যাসিস্ট সুবিধাভোগী ট্যাগ দিয়ে এই সিন্ডিকেটের সুবিধামত পদায়ন করায় মূল ভূমিকায় আছে এমন অভিযোগ আছে। কিন্তু তার নামেই রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ।

শুধু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নয়, ৫ আগস্ট পরবর্তী দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের সুযোগে এই সিন্ডিকেট তার প্রভাব বিস্তার করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

এই সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় ৫ আগস্টের পর ডিজারশন ও অসদাচরণের অভিযোগে চাকরি হতে বরখাস্তকৃত ফ‍্যাসিস্ট সহযোগী স্বরাষ্ট্রের সাবেক যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসের বশংবদ বিকাশ বিশ্বাস প্রায় ৪ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রে থাকলেও অদ‍্যাবধি সেখানেই আছেন এবং উপসচিব প্রমোশনও
পেয়েছেন।

সিন্ডিকেটের সহায়তায় অর্থ মন্ত্রণালয়েও বহাল তবিয়তে বর্তমান রয়েছেন সাবেক অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সহযোগীরা। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়া বহু কর্মকর্তাকে অর্থের বিনিময়ে/স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে পুনরায় আবার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়/বিভাগে পুনর্বহাল করছে এই সিন্ডিকেট।

তবে, এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্তির উপায়ও আছে। ডিজিটালাইজেশন + স্বচ্ছ নীতি + জবাবদিহিতা + রাজনৈতিক সদিচ্ছা + জনচাপ—এই পাঁচ ধাপে একসাথে কাজ করলে সিন্ডিকেট দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়বে।

ঘোলাটে লটারীর মাধ্যমে ইউএনও পদায়নের এ প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ৩৭ তম প্রশাসন ক্যাডারের ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামসুল কবির রাহাতের বন্ধু ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ঘনিষ্ঠ মিজ মনীষা রানী কর্মকারকে শিবালয় উপজেলা, মানিকগঞ্জে পদায়ন করা হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী আমলের আরেকসুবিধাভোগী, শাহ মোঃ যুবায়েরকে ইউএনও হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এ পদায়ন দেওয়া হয়েছে।আরেক মুজিবপ্রেমি, আওয়ামীমনা জনাব এসএম ফয়েজ উদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়েছে।
মুজিবমনা জনাব মোঃ আসাদুর রহমানকে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন পাওয়া মিজ মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়ার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের ঘোরতর সমর্থক এবং সে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব যিনি পরবর্তীতে ২০২৪ সালে হাসিনার পাতানো নির্বাচনে মোহনগঞ্জের এমপি হয়েছিলেন সেই সাজ্জাদুল হাসান এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জুডিসিয়াল ক্যু করার চক্রান্তকারী সাবেব প্রধান বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। এ কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদী আমলে ঢাকা ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভাঙ্গা উপজেলার এসি ল্যান্ড ছিলেন।

এরকম আমরা আরো ২০ জনের অধিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের পদায়নের তথ্য প্রমান রয়েছে আমাদের কাছে।

তথ্য সূত্র: আইবিএন নিউজ

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় নিউজ

“বিজেএস থেকে বাদ পড়া ১৩ প্রার্থীর গেজেটভুক্তির দাবিতে রাবিতে মানববন্ধন”

“লটারি ভিত্তিক ইউএনও নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জেএসএফের সমালোচনা”

Update Time : ০৫:৩২:৫১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২ ডিসেম্বর ২০২৫

 

হাকিকুল ইসলাম খোকন,বাপসনিউজ: প্রহসনের লটারীতে ইউএনও পদায়নে আওয়ামীমনা ফ্যাসিবাদীদের জয়জয়কার: নেপথ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইং এর ফরিদী, বারিউল ও তৌহিদ সিন্ডিকেট। এখানে নতুন করে আরেকজন যুক্ত হয়েছে জনপ্রশাসন এপিডি উইং এর উজ্বল হোসেন।এই সিন্ডিকেট নিয়ে এর আগে সমালোচনা হলে বারিউলকে জনপ্রশাসন থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।কিন্তু নতুন করে উজ্জ্বল যুক্ত হওয়ায় এই সিন্ডিকেট আরো শক্তিশালী হয়।বলে বাপসনিউজকে এক বিরৃতিতে জানিয়েছেন জেএসএফ সংগঠক হাজী আনোয়ার হোসেন লিটন।

গত ২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ,এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রহসনের ও গোলাটে পদ্বতির লটারীর নামে ৩৭তম বিসিএস এর ১৬৬ জনকে ইউএনও হিসেবে বিভিন্ন উপজেলায় পদায়ন দিয়ে এবং ৩৫ ও ৩৬ ব্যাচের ১৫৮ জনকে ইউএনও থেকে প্রত্যাহার করে প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। যেখানে ০৫ আগস্টের ন্যায়সঙ্গত জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদমুক্ত করলেও সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে অসচ্ছ ও ঘোলাটে লটারীর নামে আওয়ামী ও ফ্যাসিবাদমনা অফিসারদের ইউএনও হিসেবে ঢাকা ও এর আসেপাশের উপজেলায় পদায়ন দিয়ে জুলাই শহিদদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে আবারও ফ্যাসিবাদ পুনর্বাসন করার প্রচেষ্টার নেপথ্যে কারিগর জনপ্রশাসনের এপিডি উইং এর মিয়া আশরাফ রেজা ফরিদী, উজ্জ্বল হোসেন ও তৌহিদ বিন হাসান।

দীর্ঘদিন ধরেই একটা কথা শোনা যায় “জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিন্ডিকেট”। এই সিন্ডিকেট কিভাবে কাজ করে আর কতদূর তার বিস্তার, কারা সিন্ডিকেটকে ব‍্যাক করেন এগুলি নিয়েই আজকের পোস্ট। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এই অভ্যন্তরীণ স্বার্থগোষ্ঠী এমন একটি নেটওয়ার্ক বা গোষ্ঠী, যারা প্রশাসনিক ক্ষমতা, বদলি-পদোন্নতি, সুবিধা বণ্টন, প্রকল্প অনুমোদন কিংবা সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করে। এদের কাজের ধরন অনেকটা “অদৃশ্য প্রভাব বিস্তার” এর মতো।

তারা কি করে? সংক্ষেপে তারা-
১. বদলি ও পদোন্নতি নিয়ন্ত্রণ; ২. ফাইল ও অনুমোদন বাণিজ্য; ৩. দলবদ্ধ লবিং ও নেটওয়ার্ক; ৪. অর্থনৈতিক স্বার্থ; ৫. রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার; ৬. অভ্যন্তরীণ ভয়-ভীতি ও প্রভাব।

সিন্ডিকেটের ভেতরে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে দপ্তরের মাঠপর্যায়ের কর্মচারী পর্যন্ত চেইন তৈরি হয়।

১.মিয়া আশরাফ রেজা ফরিদী-

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইং এর যুগ্মসচিব মিয়া মোঃ আশরাফ রেজা ফরিদী ছিলেন আওয়ামী আমলে সুবিধাভোগী। তিনি ০৫ আগস্ট, ২০২৪ এর আগে সরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব ছিলেন এবং তার শ্যালক ও ব্যাচমেট আওয়ামীমনা, ফ্যাসিস্ট আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান ছিলেন নরসিংদির ডিসি। আগের আমলে সুবিধাভোগী এ কর্মকর্তা ০৫ আগস্ট, ২০২৪ এর পরবর্তীতে ভোল পাল্টিয়ে এখন হয়ে গেছেন অনেক অফিসারের ভাগ্যনিয়ন্তা। এমনকী তার গঠিত সিন্ডিকেট এর প্রভাব খাটিয়ে সাবেক খুলনার বিভাগীয় কমিশনার জনাব মোঃ ফিরোজ সরকারকে এপিডি হিসেবে বসতে দেওয়া হয়নি বলে শুনা যায়৷

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বদলি/পদোন্নতি/পদায়নের কাজ হয় মন্ত্রণালয়ের “নিয়োগ, পদোন্নতি ও প্রেষণ অনুবিভাগ বা এপিডি উইং” থেকে। আর সেখানেই লুকিয়ে আছে সিন্ডিকেটের চর। এপিডি উইংয়ে এই সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে রয়েছেন ঊর্ধ্বতন নিয়োগ অধিশাখার যুগ্মসচিব মিঞা মোহাম্মদ আশরাফ রেজা ফরিদী। কে এই ফরিদী? তার ক্ষমতার উৎস কোথায়? নিজেকে বিএনপি বলে পরিচয় দেন অথচ পদোন্নতি পেয়েছেন নিয়মিত এবং ফ‍্যাসিস্টের সময় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের মত গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরেই কাজ করেছেন। তার কাজ উপসচিব থেকে তদূর্ধ্ব বদলি-পদায়ন-পদোন্নতি কিন্তু তিনিই নিয়ন্ত্রণ করেন ডিসি পদায়ন থেকে শুরু করে সংস্থা প্রধান নির্বাচন। সম্প্রতি কক্সবাজারের ডিসি বা চট্টগ্রামের ডিসি পদায়নকে কেন্দ্র করে উপদেষ্টা কমিটির সাথে যে মতবিরোধের কথা শোনা যায় তার মূলেও আছেন এই ফরিদী, তার পছন্দের লোককে ডিসি বানাতেই সরে যেতে হলো জনপ্রশাসন সচিবকে। তার শ‍্যালক ও ব‍্যাচমেট হচ্ছেন আবু নঈম মোহাম্মদ মারুফ খান যিনি ছিলেন নরসিংদীর ডিসি ও ফ‍্যাসিস্টের সচিব এম সাজ্জাদুল হাসান এবং মুখ‍্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়ার একান্ত সচিব (বর্তমানে পরিবেশ উপদেষ্টার একান্ত সচিব হিসাবে বহাল তবিয়তে আছেন)।

২.তৌহিদ বিন হাসান: এপিডি উইংয়ে ফরিদীর ডানহাত আরেক কর্মকর্তা উপসচিব তৌহিদ বিন হাসান, যার খালুশ্বশুর কর্নেল দিলাওয়ার হচ্ছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের খুনের একজন আসামী হিসেবে ফাঁসির দণ্ডে দণ্ডিত।

তিনি নিজে ২০১৮ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জ উপজেলার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ARO) হিসেবে নির্বাচনের আগের রাতে দুই-তৃতীয়াংশ ব‍্যালট বাক্স ভরে ফেলেছিলেন।

তার পিতা আহসান আলী দুদকের উপপরিচালক হিসেবে দুর্নীতির অভিযোগে বাধ‍্যতামূলক অবসর পেয়েছেন। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এপিডি উইংয়ের কর্মকর্তা হিসাবে তিনি এসএসবি সভার তথ‍্য নিয়োগ-বদলি বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের কাছে সরবরাহ করেন এবং সিন্ডিকেট সেই তথ‍্য ধরে বিভিন্ন পদোন্নতি/পদায়নপ্রত‍্যাশী কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করে এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এপিডি উইংয়ের এসএসবি এর সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নাম ভাঙিয়ে টাকার বিনিময়ে পদোন্নতি-পদায়নের চুক্তি করে।

সম্প্রতি ৩০তম ব‍্যাচের উপসচিব পদে পদোন্নতি প্রত‍্যাশী একাধিক কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করে বলা হয় তার রিপোর্ট খারাপ, তারপরেও পদোন্নতি করে দিতে পারবে যদি তারা (বিভিন্ন লেয়ারে দিতে হবে+সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেসহ ১১ লাখ) এরকম কনট্রাক্টে আসেন।

এপিডি উইংয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সকল ক‍্যাডার পদে পদোন্নতির কাজ করা হয় ঊনি-১ শাখা থেকে অথচ ঊর্নি-৩ শাখায় কর্মরত তৌহিদ বিন হাসান উপসচিব ও তদূর্ধ্ব পদে পদোন্নতি শুধু নয়, এ সকল পদে পদায়ন, পিএস নিয়োগ, ইউএনও/এডিসি/ডিসি নিয়োগসহ বিভিন্ন শাখার কার্যক্রমে অযাচিত হস্তক্ষেপ করেন এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/দপ্তরে নিজের লোক পদায়নের মাধ্যমে একটি অনুগত গ্রুপ সৃজন করেছেন যারা ঐসব মন্ত্রণালয়/বিভাগের অভ‍্যন্তরীণ প্রশাসনিক কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করেন।

আওয়ামী সুবিধাভোগী এই সুবিধাবাদী কর্মকর্তা তার ব‍্যাচের আওয়ামী সুবিধাভোগী বিভিন্ন কর্মকর্তার সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন।

তৌহিদ বিন হাসান ৫ আগস্টের আগে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর সৈনিক হিসেবে গাজীপুরের সহকারী কমিশনার, ঢাকার লালবাগ সার্কেলের এসিল‍্যান্ড, নারায়ণগঞ্জের বন্দরের এসিল‍্যান্ড, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। কথিত আছে, এপিডি উইংয়ে বিগত ফ‍্যাসিস্ট সরকারের আমলে বদলি বাণিজ্যের সিন্ডিকেটের হোতা সাবেক ডিবি প্রধান মনিরুলের স্ত্রী সায়লা ফারজানা এবং তার বশংবদ কে এম আল আমীন, ভাস্কর দেবনাথ, নাজমা নাহারকে খুশি করার মাধ্যমে তিনি ২০২৩ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে নিয়োগ পান।

৫ আগস্টের পরে ভোল পাল্টে এই কর্মকর্তা রাতারাতি বিএনপিপন্থী বনে গিয়ে জনপ্রশাসনের বর্তমান সিন্ডিকেটকে মাসোহারা প্রদানের মাধ্যমে এপিডি উইংয়ে অনুপ্রবেশ করেন। যদি ভবিষ্যতে জামাত ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা দেখেন এই কর্মকর্তা তাহলে তিনি নিশ্চিত জামাত বনে যাবেন, অপেক্ষা করুন।

৩. মোঃ উজ্বল হোসেন: 
এপিডি উইং এর এ সিন্ডিকেটের আরেক সদস্য৩৪ ব্যাচের কর্মকর্তা জনাব মোঃ উজ্জ্বল হোসেন। যিনি ফ্যাসিবাদী আমলে নারায়ণগঞ্জের তৎকালীন ফ্যাসিবাদী ডিসি জনাব রাব্বী মিয়ার প্রিয় অফিসার ছিলেন।

সাবেক জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ কর্মী ও ফ্যাসিবাদী রাব্বী মিয়ার কাছের অফিসার হওয়ায় প্রায় দুই বছর নারায়ণগন্জের আড়াইহাজারে এসি ল্যান্ড হিসেবে পদায়ন পেয়েছিলেন। এইচ টি ইমামের কাছের হওয়ায় তাকে উল্লাপাড়া উপজেলা, সিরাজগঞ্জের ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়। তার পুরো পরিবার বগুড়া জেলার শাহজানপুর উপজেলার আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। ০৫ আগস্ট, ২০২৪ তারিখের পর বগুড়া বাড়িকে কাজে লাগিয়ে সে হয়ে যায় অনেক অফিসারের ভাগ্যনিয়ন্তা।

অনেককে ফ্যাসিস্ট সুবিধাভোগী ট্যাগ দিয়ে এই সিন্ডিকেটের সুবিধামত পদায়ন করায় মূল ভূমিকায় আছে এমন অভিযোগ আছে। কিন্তু তার নামেই রয়েছে বিভিন্ন অভিযোগ।

শুধু জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নয়, ৫ আগস্ট পরবর্তী দেশের অস্থিতিশীল পরিবেশের সুযোগে এই সিন্ডিকেট তার প্রভাব বিস্তার করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, পরিবেশ মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ে।

এই সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় ৫ আগস্টের পর ডিজারশন ও অসদাচরণের অভিযোগে চাকরি হতে বরখাস্তকৃত ফ‍্যাসিস্ট সহযোগী স্বরাষ্ট্রের সাবেক যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাসের বশংবদ বিকাশ বিশ্বাস প্রায় ৪ বছর ধরে স্বরাষ্ট্রে থাকলেও অদ‍্যাবধি সেখানেই আছেন এবং উপসচিব প্রমোশনও
পেয়েছেন।

সিন্ডিকেটের সহায়তায় অর্থ মন্ত্রণালয়েও বহাল তবিয়তে বর্তমান রয়েছেন সাবেক অর্থ সচিব আব্দুর রউফ তালুকদারের সহযোগীরা। ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দপ্তর থেকে সরিয়ে দেওয়া বহু কর্মকর্তাকে অর্থের বিনিময়ে/স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে পুনরায় আবার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়/বিভাগে পুনর্বহাল করছে এই সিন্ডিকেট।

তবে, এই সিন্ডিকেটের হাত থেকে মুক্তির উপায়ও আছে। ডিজিটালাইজেশন + স্বচ্ছ নীতি + জবাবদিহিতা + রাজনৈতিক সদিচ্ছা + জনচাপ—এই পাঁচ ধাপে একসাথে কাজ করলে সিন্ডিকেট দুর্বল হয়ে ভেঙে পড়বে।

ঘোলাটে লটারীর মাধ্যমে ইউএনও পদায়নের এ প্রজ্ঞাপনে দেখা যায় ৩৭ তম প্রশাসন ক্যাডারের ফ্যাসিবাদের অন্যতম দোসর, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শামসুল কবির রাহাতের বন্ধু ও পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজির আহমেদের ঘনিষ্ঠ মিজ মনীষা রানী কর্মকারকে শিবালয় উপজেলা, মানিকগঞ্জে পদায়ন করা হয়েছে।
ফ্যাসিবাদী আমলের আরেকসুবিধাভোগী, শাহ মোঃ যুবায়েরকে ইউএনও হিসেবে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও এ পদায়ন দেওয়া হয়েছে।আরেক মুজিবপ্রেমি, আওয়ামীমনা জনাব এসএম ফয়েজ উদ্দিনকে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়েছে।
মুজিবমনা জনাব মোঃ আসাদুর রহমানকে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন দেওয়া হয়েছে। ফরিদপুর সদর উপজেলায় ইউএনও হিসেবে পদায়ন পাওয়া মিজ মেশকাতুল জান্নাত রাবেয়ার পুরো পরিবার আওয়ামীলীগের ঘোরতর সমর্থক এবং সে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব যিনি পরবর্তীতে ২০২৪ সালে হাসিনার পাতানো নির্বাচনে মোহনগঞ্জের এমপি হয়েছিলেন সেই সাজ্জাদুল হাসান এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে জুডিসিয়াল ক্যু করার চক্রান্তকারী সাবেব প্রধান বিচারপতি জনাব ওবায়দুল হাসানের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়। এ কর্মকর্তা ফ্যাসিবাদী আমলে ঢাকা ডিসি অফিসের ম্যাজিস্ট্রেট এবং ভাঙ্গা উপজেলার এসি ল্যান্ড ছিলেন।

এরকম আমরা আরো ২০ জনের অধিক ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের পদায়নের তথ্য প্রমান রয়েছে আমাদের কাছে।

তথ্য সূত্র: আইবিএন নিউজ